ভূমিকা:
বিগত দুই দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশ ধীরে ধীরে কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতির দেশ হতে শিল্প ভিত্তিক অর্থনীতির দেশে রূপান্ততির হতে চলেছে যেখানে তৈরী পোষাক শিল্প একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে। এই রূপান্তরের ফলে একদিকে যেমন বিভিন্ন শিল্প সেকটরে উল্লেখযোগ্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, পাশাপাশি শিল্প ক্ষেত্রে নানারকম ঝুঁকি, দুর্ঘটনার হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নতুন গুরুত্ব নিয়ে আত্নপ্রকাশ করেছে। এ উপলব্ধি থেকে সরকার ২০১৩ সালে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা, ২০১৩ প্রনয়ণ করে। উক্ত নীতিমালায় দেশের সামগ্রিক কর্মপরিবেশ উন্নয়নের তথা বিভিন্ন শিল্প সেকটরে কর্মরত শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে যুগপোযোগী প্রশিক্ষণ প্রদান ও গবেষণা পরিচালনার জন্য একটি বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা বিষয়ক নির্দেশনা ছিল।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর বাংলাদেশ শ্রম আইন ও জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালার আলোকে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিচালনা করে। ২০১৮ সালে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের অধীন জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১৮ সালে কার্যক্রম শুরু হয়ে ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়।
অবকাঠামো:
প্রতিষ্ঠানটিতে ৪ তলা বিশিষ্ট একটি দৃষ্টিনন্দন একাডেমিক ভবন, ৬ তলা বিশিষ্ট ১টি পুরুষ ও ৬ তলা বিশিষ্ট ১টি মহিলা হোস্টেল রয়েছে। এছাড়া টিচার্স কোয়ার্টার, ব্যাচেলর কোয়ার্টার, প্রতিষ্ঠান প্রধানের আবাসিক বাংলো, ইন্সপেকশন বাংলো, ফ্যাকাল্টি কোয়ার্টার ও স্টাফ কোয়ার্টার রয়েছে। একাডেমিক ভবনে GIZ এর সহযোগীতায় অত্যাধুনিক ক্লাস রুম ও বিভিন্ন প্রকার গবেষণাগার স্থাপন করা হয়েছে। গবেষণাগার গুলোর মধ্যে রয়েছে বায়ু ও পানি পরীক্ষার ল্যাব, আলো ও শব্দ পরিমাপক ল্যাব, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE) প্রদর্শন ল্যাব, বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত ল্যাব, অগ্নি ও নির্মাণ নিরাপত্তা বিষয়ক ভার্চয়াল রিয়েলিটি ল্যাব।
জনবল:
বর্তমানে ইনস্টিটিউটটিতে রাজস্বখাতে ১৩ জন জনবলের অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে যেখানে ১ জন যুগ্ম মহাপরিদর্শক প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি ৪ জন উপ মহাপরিদর্শক, ৪ জন সহকারী মহাপরিদর্শক ও ৪ জন শ্রম পরিদর্শক রয়েছে। এছাড়া আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে ১০ জন আনসার এবং কেয়ার টেকার, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লামবার, জেনারেটর অপারেটর, পাম্প অপারেটর, বাবু্র্চি, গার্ডেনার, ক্লিনার, সহকারী বাবুর্চি, লিফট ম্যান, ল্যাব এটেনডেন্ট, হোস্টেল এটেনডেন্ট পদসমূহে মোট ৪৩ জন জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান আছে। রাজস্বখাতে আরও প্রয়োজনী জনবল বৃদ্ধির কার্যক্রমও চলমান আছে।